১৭ই আগস্ট, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ
২রা ভাদ্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ, বুধবার
AmaderRamu.com
  •  
  • কক্সবাজার জেলা
    • কক্সবাজার সদর
    • উখিয়া
    • কুতুবদিয়া
    • চকরিয়া
    • টেকনাফ
    • পেকুয়া
    • মহেশখালী
  • পার্বত্য চট্রগ্রাম
    • বান্দরবান
    • রাঙ্গামাটি
    • খাগড়াছড়ি
  • সারাদেশ
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • বরিশাল
    • ময়মনসিংহ
    • রংপুর
    • রাজশাহী
    • সিলেট
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • গোলটেবিল বৈঠক
    • ধর্মকথা
    • সাক্ষাৎকার
    • তারুণ্যের লেখালেখি
    • ছড়া ও কবিতা
    • কলাম
    • সাধারণের কথা
    • অনলাইন ভোট
  • বিশেষ প্রতিবেদন
    • কীর্তিমান
    • প্রতিভা
    • ঐতিহ্য
    • অবহেলিত
    • পুরাকীর্তি ও প্রত্নতত্ত্ব
    • শেখড়ের সন্ধান
    • প্রতিষ্ঠান
  • রাজনীতি
    • আওয়ামীলীগ
    • বিএনপি
    • জাতীয়পার্টি
    • রাজনৈতিক দল সমূহ
    • ছাত্র রাজনীতি
  • নির্বাচন
    • স্থানীয় সরকার
    • সংসদ
    • ইসি
  • শিল্প-সাহিত্য
    • কবিতা
    • গল্প
    • উপন্যাস
    • আর্ট
    • চিঠি
    • ছড়া
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
    • সংবাদ
  • বিবিধ
    • প্রধান খবর
    • রামু প্রতিদিন
    • পর্যটন
      • বৌদ্ধ ‍বিহার
      • স্থাপনা
      • প্রাকৃতিক
    • চাকরির খবর
    • শিল্প-সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি
    • উন্নয়ন
    • সাংস্কৃতিক
    • মানচিত্রে রামু
    • শিক্ষাঙ্গন
    • শিক্ষা
    • রামু তথ্য বাতায়ন
    • সমস্যা ও সম্ভাবনা
    • আমাদের রামু পরিবার
    • অপরাধ
    • আইন-আদালত
    • সংসদ ও মন্ত্রীসভা
    • স্বাস্থ্য
ফলাফল নেই
সকল ফলাফল দেখুন
  •  
  • কক্সবাজার জেলা
    • কক্সবাজার সদর
    • উখিয়া
    • কুতুবদিয়া
    • চকরিয়া
    • টেকনাফ
    • পেকুয়া
    • মহেশখালী
  • পার্বত্য চট্রগ্রাম
    • বান্দরবান
    • রাঙ্গামাটি
    • খাগড়াছড়ি
  • সারাদেশ
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • বরিশাল
    • ময়মনসিংহ
    • রংপুর
    • রাজশাহী
    • সিলেট
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • গোলটেবিল বৈঠক
    • ধর্মকথা
    • সাক্ষাৎকার
    • তারুণ্যের লেখালেখি
    • ছড়া ও কবিতা
    • কলাম
    • সাধারণের কথা
    • অনলাইন ভোট
  • বিশেষ প্রতিবেদন
    • কীর্তিমান
    • প্রতিভা
    • ঐতিহ্য
    • অবহেলিত
    • পুরাকীর্তি ও প্রত্নতত্ত্ব
    • শেখড়ের সন্ধান
    • প্রতিষ্ঠান
  • রাজনীতি
    • আওয়ামীলীগ
    • বিএনপি
    • জাতীয়পার্টি
    • রাজনৈতিক দল সমূহ
    • ছাত্র রাজনীতি
  • নির্বাচন
    • স্থানীয় সরকার
    • সংসদ
    • ইসি
  • শিল্প-সাহিত্য
    • কবিতা
    • গল্প
    • উপন্যাস
    • আর্ট
    • চিঠি
    • ছড়া
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
    • সংবাদ
  • বিবিধ
    • প্রধান খবর
    • রামু প্রতিদিন
    • পর্যটন
      • বৌদ্ধ ‍বিহার
      • স্থাপনা
      • প্রাকৃতিক
    • চাকরির খবর
    • শিল্প-সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি
    • উন্নয়ন
    • সাংস্কৃতিক
    • মানচিত্রে রামু
    • শিক্ষাঙ্গন
    • শিক্ষা
    • রামু তথ্য বাতায়ন
    • সমস্যা ও সম্ভাবনা
    • আমাদের রামু পরিবার
    • অপরাধ
    • আইন-আদালত
    • সংসদ ও মন্ত্রীসভা
    • স্বাস্থ্য
ফলাফল নেই
সকল ফলাফল দেখুন
AmaderRamu.com
ফলাফল নেই
সকল ফলাফল দেখুন
প্রচ্ছদ মতামত কলাম

বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা এবং আইন

নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
জানুয়ারি ৭, ২০২২
বিভাগ কলাম
0
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা এবং আইন
0
শেয়ার
0
ভিউ
Share on FacebookShare on Twitter

সাঈদ মাসুদ রেজাঃ
আমাদের দেশের শিক্ষিত এবং প্রায় শিক্ষিত শ্রেণির মাঝে আইনের সামর্থ্য নিয়ে একধরনের ‘অতি প্রত্যাশা’ আছে। যেকোনও সামাজিক বা সর্বদেশীয় সমস্যা প্রবল আকার ধারণ করলে, যদি আপনার পরিচিতজনদের একেক করে জিজ্ঞেস করেন, পরিত্রাণের উপায় কী– অনুমান করি, ১০ জনের ৮ জনই বলবে, কঠিন আইন করা দরকার; কড়া শাস্তি দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে। সাধারণ মানুষের মাঝে আইন নিয়ে এই অতি প্রত্যাশা আপনিও লক্ষ্য করে থাকবেন। আইনকে সামাজিক তথা রাষ্ট্রীয় সমস্যার একধরনের প্রতিবিধান, ঔষধ বা টোটকা মনে করা যেতে পারে। এমন একটি স্কুল অব থট আছে যারা মনে করেন আইনের একটি মূল কাজ সবার ওয়েল বিং বা কল্যাণ নিশ্চিত করা। এই প্রত্যাশাটুকু বলা যেতে পারে অনেক সমস্যার বেলাতেই হয়তো যৌক্তিক। কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের দেশে আমরা নিয়মিত যেসব সমস্যার এমনকি অপরাধের বা সহিংসতার মুখোমুখি হই তার সবগুলোর সমাধান আইন, কঠিন আইন, বা কড়া শাস্তি দিতে পারে কিনা? আমার বিনীত উত্তর হচ্ছে না, পারে না।

সমাজ এবং রাষ্ট্রের বিস্তীর্ণ পরিসরে বহু রকম হিসেব, লক্ষ্য এবং রাজনীতি কাজ করে। এরই একটি মিনিয়েচার ভার্শন হচ্ছে ব্যক্তির জীবন এবং তার সাথে অন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক। আমাদের ব্যক্তি, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় জীবন যেসব শক্তিশালী বয়ান দ্বারা ভীষণভাবে প্রভাবিত তার একটি হচ্ছে ধর্ম, আরেকটি হচ্ছে আইন। একথা অস্বীকার করার উপায় নাই যে বাঙালির সমাজ জীবনে ধর্মের বর্ধিষ্ণু প্রভাব রয়েছে। সমাজ জীবন ছেড়ে আপনি যতই রাষ্ট্রীয় জীবনে প্রবেশ করেন, ততই আপনি আইনের জগতে বা প্রভাব বলয়ে প্রবেশ করেন। যদিও এই জগতেও ধর্মের প্রভাবটি নানামাত্রায় থাকে, তবে একথা বলা ভুল হবে না যে, তার ক্ষেত্র সীমিত। এর কারণ, যে ওয়েস্টফালিয়ান মডেলের ওপর ভিত্তি করে উত্তর উপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলো দাঁড়িয়ে আছে তার কাঠামো এবং চর্চায় ধর্মের স্থান সুনির্দিষ্ট এবং সীমিত। কিন্তু এর মানে এটা নয় যে, রাষ্ট্রের আইন এবং ধর্মের মাঝে কোনও প্রচ্ছন্ন, প্রলম্বিত বা প্রকাশ্য দ্বৈরথ চলছে না; এস্টাব্লিশমেন্ট বলতে আমরা যা বুঝি, আপনি এর বাইরে যত যাবেন, ধর্মের প্রভাববলয় তত বাড়তে থাকবে। এর কারণ অনুমানযোগ্য। তা বোধহয় এই যে, সমাজ কোনকালেই আইনের পুরোপুরি বশ ছিল না। (বাস্তব কারণেই এটা সম্ভবও না। নানামতের, ধর্মের, চিন্তার, পথের এক বিপুল সংখ্যক মানুষ নিয়ে আমাদের সমাজগুলো গঠিত। আইন সব মানুষের জন্যে তৈরি করা হলেও তার অ্যাফেক্টিভ ডোমেইন এত বড় না। আইনের তৎপরতা প্রধানত অপরাধ, সহিংসতাসহ আরো কিছু অধিকার এবং বিবাদ মীমাংসার মাঝে সীমিত, যা সমাজের পরিসরের তুলনায় ছোট) এই অ-বশ সমাজে ব্যক্তির অধিকতর স্বাধীনতা থাকে নিজের ইচ্ছেমত চলবার, বলবার। এই সমাজের একাধিক নিজস্ব যুক্তি, ধারণা, ভাষা, প্রতীক, ট্যাবু এবং রিচুয়াল আছে। এর অনেকগুলোরই উৎস, বিধান, বৈধতা আসে সরাসরি ধর্মের বয়ান থেকে।

একথা আমরা জানি যে, ধর্মের কিছু কিছু ব্যাখ্যা ও বিচার, আইন এবং অধিকারসম্মত নয়। যদিও এই সংঘাতের পরিসর খুব বড় নয়, তারপরেও এটি যে আছে, তা এই বিষয়ে পড়াশোনা করা যে কেউ স্বীকার করবেন। এই কথা বাংলাদেশের বড় প্রতিটি ধর্মের বেলাতেই কম বেশি সত্য। এই অবস্থায় ধরা যাক, আইন-আদালত পাশ কাটিয়ে, আমাদের সমাজে, রাষ্ট্রের আইন এবং ধর্মের যুক্তির মাঝে একটি বিতর্ক শুরু হয়েছে। যদি সমাজের সব স্তরের মানুষ এই বিতর্কে অংশ নেন, সে ক্ষেত্রে ধর্মীয় যুক্তির জনবৈধতা পাবার আশংকা বেশি। কারণ, আইনের যুক্তিগুলো আদালত প্রাঙ্গণে খুব কাজ দিলেও জনসাধারণের মাহফিলে এগুলোর আবেদন কম হবার কথা। আইন বা তার ব্যাখ্যা বোঝার জন্যে এই বিষয়ে প্রাথমিক কিছু জ্ঞান থাকা প্রয়োজন, যা আমাদের জনসাধারণের নেই; পাশাপাশি আরো যেসব কারণ হতে পারে তার একটা হচ্ছে, শিক্ষার অভাব নয় বরং অযুক্তিপূর্ণ শিক্ষার প্রাচুর্য। আমাদের সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশেরই রিজনিং করার ক্ষমতা দুর্বল। তারা একাধিক যুক্তির মাঝে কোনটি অধিকতর গ্রহণযোগ্য এটি বুঝতে প্রায়শ ভুল করেন। খুব আবেগী এবং বিশ্বাস নির্ভর হওয়ায় সেই ভুলটি তারা প্রবলভাবে করেন এবং বার বার করেন। আরেকটি কারণ বেশ প্রাচীন; যা তর্কসাপেক্ষে প্রথম উচ্চারিত হয়েছিল, গ্রীক নাট্যকার সফোক্লিসের বিখ্যাত অয়দিপাস ট্রিলজির অন্যতম নায়িকা অ্যান্টিগণের মুখ দিয়ে। রাজার নিষেধ অমান্য করে নিজের ভাইয়ের লাশ কবরস্থ করার পক্ষে তার যুক্তির মূল কথা ছিল, লড়াই যখন মানুষের তৈরি রাষ্ট্রীয় আইন বনাম স্রষ্টার দেয়া বিধান, তখন স্রষ্টার আইনই মেনে নিতে হবে। কারণ স্রষ্টার আইনের অবস্থান মানুষের আইনের উপরে। এই বিশ্বাস আমাদের সমাজেও গভীর এবং পোক্ত। এই চিন্তায় একটি প্রচ্ছন্ন যুক্তি আছে; যার বিপরীতে কোনও অধিকতর শক্ত প্রতিযুক্তি সমাজে নাই। অতএব, এই বিশ্বাস ধর্মপ্রাণ মানুষের থাকতে পারে। ধর্মঅন্তপ্রাণ মানুষের এমনটা ভাবাই স্বাভাবিক।

ফলে, এই কথা বলাটা বোধহয় খুব ভুল হবে না, সমাজের গহীনে রাষ্ট্রীয় আইনের সক্ষমতা খুবই প্রান্তিক। আরো অনুমান করা যায় যে, আইন পাল্টে কোনও সামাজিক সমস্যার কার্যকর প্রতিকার করা যায় না, বিশেষত যদি তার ধর্মীয় বৈধতা এবং প্রশ্রয় থাকে। আমাদের বুঝতে হবে কারো কাছে যেটা সমস্যা, কারো কাছে সেটাই সম্পদ, কারো কাছে সেটাই বড় আইন, সেটাই বৈধ, আবার কারো কাছে সেটাই রাজনীতির আকর্ষনীয় ময়দান। যে সমস্যার পরিসর সমাজের সর্বত্র, যা বহুমাত্রিক, যার বৈধতা নিয়ে সমাজে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব আছে, চিন্তার এবং বয়ানের ফারাক আছে, বহুমাত্রিক-বহুপাক্ষিক সুবিধা-অসুবিধা রাজনীতির যোগবিয়োগ আছে, তা শুধু আইনের টোটকায় সারবে, এই চিন্তা সুখপ্রদ হলেও শিকড়ছিন্ন এবং অবাস্তব। মনে রাখা উচিত, আইন কেবল প্রকাশ্যে করা অপরাধের বিচার করতে পারে। কিন্তু, কোনও মনোভাবের বিচার করা, সমাজে বৈধতা পাওয়া (যদিও আইনে অবৈধ) এমন কোনও চিন্তার বা বয়ানের বিচার করা, তাকে পরাজিত করা, অপসারণ করা আইনের কাজ নয়। আইন সহিংসতার বিচার করতে পারে বা প্রচারককে শাস্তি দিতে পারে। কিন্তু, এমন এক বা একাধিক বয়ানকারীর বিচার হলে বা সহিংসতার শাস্তি হলে, তাতে সমাজমানসে বহুকাল ধরে প্রোথিত-সঞ্চিত-পূজিত বয়ান পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় কি? বড়জোর তা কিছুদিনের জন্যে আচ্ছন্ন এবং আড়ষ্ট থাকে। সুযোগে আবার এর প্রসার ঘটে। লম্বা সুযোগে এর বিস্তার ঘটে বেশুমার। সেই বটগাছ সহজে কাটা যায় না। মাঝেমধ্যে হয়তো ছাঁটা যায়। ছাঁটা গাছ কিন্তু গাছই।

সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সংঘাতে অনেকের ঘরদোর যেমন বিনষ্ট হয়েছে, জানমালের বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। আমরা আশা করি যে, সহিংসতার প্রতিটি ঘটনার বিচার হবে। কিন্তু, উৎসের দিকে একটু গভীরভাবে তাকালে আমরা দেখব, সাম্প্রদায়িকতার বাস বাঙালির (অবশ্যই সবার নয়) মনে; যার শেকড় হয়তো তার স্মৃতিতে এবং ইতিহাসে আছে। যারা ভারতবর্ষের ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন, পড়েন তারা জানেন, উপমহাদেশের ইতিহাসে সাম্প্রদায়িক সংঘাত একটি প্রায় নিয়মিত ঘটনা। বিচিত্র সব কারণে এখানকার হিন্দু-মুসলিমের মাঝে বহু বার সাম্প্রদায়িক সংঘাত হয়েছে; এই জোয়ারের শুরু ঔপনিবেশিক আমলে ব্রিটিশদের ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসি প্রয়োগের মধ্য দিয়ে। কিন্তু, জোয়ারের আগে যে ভাটা ছিল, সেই সময় সবকিছু ঠিক ছিল, কোনও সংঘাত ছিল না– এমন একটি জনপ্রিয় ধারণা আমাদের সমাজে আছে। আমার প্রস্তাব– এই ধারণাটি ভুল।

ভারতবর্ষে ব্রিটিশরা আসার আগে শত শত বছর ধরে হিন্দু-মুসলিমরা একই সাথে বসবাস করেছে। অনুমান করি, সেই আমলের লোকজন আমাদের সময়ের তুলনায় ধর্মনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু, তাদের ধর্ম বিশ্বাস, তাদের পারস্পরিক বিশ্বাস এবং মিত্রতাকে প্রভাবিত করেনি এই অনুমান অসম্পূর্ণ এবং কিছুটা অসম্ভবও।

যদিও ভারতের ইতিহাসে এমন ভুরি ভুরি নজির পাবেন যেখানে মুসলমান রাজার সবচেয়ে বিশ্বস্ত বা প্রধান সেনাপতি ছিলেন হিন্দু; বা হিন্দু রাজার প্রধান বা বিশ্বস্ত সেনাপতি ছিলেন মুসলমান। পরিচিতদের মাঝে সম্রাট আকবরের সেনাপতি মানসিংহ, ছত্রপতি শিবাজীর নৌপ্রধান দৌলত খান, সম্রাট আওরঙ্গজেবের অন্যতম সেনাপতি জয় সিং অথবা মহীশুরের টিপু সুলতানের প্রধান উপদেষ্টা পুর্নাইয়ার কথা বলা যায়। এরা কেউই রাজার ধর্ম পালন করতেন না; কিন্তু, এমন বহু ঘটনা আছে যেখানে রাজাজ্ঞা পালনে সেনাপতি সধর্মের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন; এবং মারা গেছেন (এমন ঘটনা আধুনিককালেও বিরল নয়)। কিন্তু, এই ইতিহাস, মূলত রাজাদের ইতিহাস। তদুপরি, এটা ইতিহাসের একটা দিক মাত্র। এর আরো দিক আছে। যেমন ধরা যাক, আওরঙ্গজেবের সময় থেকে মারাঠা এবং মুঘলদের যে লড়াই তার শুদ্ধ একটা সাম্প্রদায়িক মাত্রা আছে যার প্রভাব জনমণ্ডলে অবধারিত ছিল।

আসুন একটা থট এক্সপেরিমেন্ট করি; তাহলে বোঝা সহজ হবে। দক্ষিণ ভারতে যখন ছত্রপতি শিবাজী লড়ছেন মুঘল সম্রাটের বিরুদ্ধে, কোনও লড়াইয়ে মুঘলরা জিতছে তো কোনওটায় মারাঠারা জিতছে। আসুন অনুমান করি, এই জয়, পরাজয় এবং অনিশ্চয়তার সংবাদ যখন ভারতের অন্যত্র বসবাসরত হিন্দু এবং মুসলমানদের কাছে পৌঁছাত এই সংবাদগুলো তারা ঠিক কিভাবে গ্রহণ এবং ব্যাখ্যা করতেন? আপনার কি ধারণা খুবই অসাম্প্রদায়িকভাবে? এই সম্ভাবনা খুব কম। আমি অনুমান করি, তাদের ব্যাখ্যা, যুক্তি এবং আবেগ যথেষ্ট মাত্রায় তাদের সাম্প্রদায়িক অবস্থান নির্ভর ছিল। এই লড়াই নিয়ে ওই সময়কার দুই ধর্মের গ্রাম্য যুবকদের মাঝে কোনও বিতর্ক, হাতাহাতি, বা সংঘাতই হয় নাই এটা কি আপনি নিশ্চিত? রাজা-বাদশার লড়াইয়ের, জয়পরাজয়ের কোনও আলাপ জনগণ করেনি, তা দ্বারা আবেগাপ্লুত হয়নি এমনটা ভাবা কি বাস্তবসম্মত? সরাসরি, সাধারণ মানুষের এক বিরাট অংশই এই লড়াইয়ের অংশ ছিল না, কিন্তু অনুমান করি, এই লড়াই অবশ্যই তাদের নৈমিত্তিক বয়ানের এবং সেই সূত্রে আবেগের ও উত্তেজনার অংশ ছিল। পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশদের সময়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উত্থানেরকালে, এই সব ঐতিহাসিক ঘটনা এবং চরিত্রের যে নির্মাণ এবং ব্যবহার আমরা দেখি, তা আমার অবস্থানকে সঠিক প্রমাণ করে।

আমাদের ইতিহাস পঠন-পাঠনের এক মূল সমস্যা হলো, লিখিত ইতিহাসের অভাব; ওরাল ট্র্যাডিশন খুব বেশি হওয়ায় আমাদের পূর্বপুরুষরা লেখার ব্যাপারে খুব বেশি আগ্রহী ছিলেন না। এর একটি অবধারিত কুফল হচ্ছে, গ্রাম-গ্রামান্তরে ঘটে যাওয়া বহু বড় ঘটনার অথবা ছোট কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনার প্রায় কোনও উল্লেখ কোথাও পাওয়া যায় না। ইতিহাস বলতে আমরা যা পেয়েছি তা মূলত রাজা-বাদশাদের ইতিহাস। যাদের প্রায় সবাই ছিলেন জনদরদী, ন্যায়পরায়ণ এবং মহান!

এই অতিকথনের এক সাধারণ মুসিবত হলো, অনেক প্রয়োজনীয় কথা এতে নাই। কিন্তু, লিখিত ইতিহাসে নাই, অতএব বাস্তবে ঘটে নাই, এই অনুমান বালসুলভ। বরং, সাম্প্রদায়িকতা যে ছিল তার খুব তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত আছে এমন কিছু বয়ানের উল্লেখ করতে পারি। যেমন, যতদূর মনে করতে পারি, প্রাচীন বাংলার লিখিত ইতিহাসে প্রথম যে রাজার নাম পাওয়া যায়, তিনি হলেন শশাঙ্ক। রাজা শশাঙ্কের বিরুদ্ধে বাংলার বৌদ্ধদের নিপীড়নের অভিযোগ ছিল। শশাঙ্ক যখন রাজা ছিলেন, সেই সপ্তম শতাব্দীতে আরবে তখন ইসলাম ধর্মের মাত্র জন্ম হচ্ছে। ভারতে বিশেষত বাংলায় তখন প্রধান দুই ধর্ম ছিল সনাতন ধর্ম এবং বৌদ্ধ ধর্ম। অনুমান করি, এই দুই ধর্মের প্রাধান্য বিস্তারের লড়াই তখন চলছিল সারা ভারত জুড়েই। অনুমান করি, এই লড়াইয়ের প্রভাব ওই সময় বসবাসরত দুই সম্প্রদায়ের আন্তঃসম্পর্কে বহুভাবে পড়েছে।

আরেকটি ঘটনা, বাংলার প্রাচীন শ্রীহট্ট (আধুনিক সিলেট)-এর রাজা গৌর গোবিন্দের সাথে তার রাজ্যে বাসরত মুসলমান শেখ বোরহান উদ্দিনের। এর বর্ণনায় যা বলা হয়েছে, তা হচ্ছে, বোরহান উদ্দিন সন্তানহীন একজন পরহেজগার মুসলমান। আল্লাহর কাছে যিনি মানত করে ছিলেন যে, তার সন্তান হলে তিনি একটি গরু জবেহ করে সবাইকে খাওয়াবেন। কিছুদিন পর তার একটি পুত্র সন্তান হয়। বোরহান উদ্দিন মহাখুশিতে একটি গরু কোরবানী দিয়ে সবাইকে খাওয়ালেন। ওই সময় তার বাড়ির সামনে পড়ে থাকা একটি মাংসের টুকরা কোনভাবে পাখির মুখ হয়ে রাজপণ্ডিতের বাড়িতে পৌঁছায়। এই খবর পান, রাজা গৌর গোবিন্দ। তিনি লোকজনদের দিয়ে খবর নিলেন, তার রাজ্যে কে গোমাতাকে হত্যা করেছে। বোরহান উদ্দিনকে ধরে আনা হলো; তার অপরাধের শাস্তি হিসেবে তার নবজাত পুত্রকে হত্যা করা হলো। পুত্রশোক নিয়ে বোরহান উদ্দিন দিল্লির সুলতানের দরবারে বিচার নিয়ে যান। সব শুনে সুলতান, তার এক সেনাপতি নাসিরউদ্দিনকে সৈন্যসহ পাঠান। এই যুদ্ধে দিল্লির সৈন্যরা জয়লাভ করে।

এমন আরেকটি ঘটনা, বাংলার সুলতানী শাসনামলের (যদিও রিয়াজে বর্ণিত ঘটনাটি নিয়ে বিতর্ক আছে, তারপরেও এর ইঙ্গিতটি আমাদের জানা জরুরী)। ইলিয়াস শাহি সুলতানদের শেষ দিকে বাংলা অল্প সময়ের জন্যে হলেও একজন হিন্দু রাজার দ্বারা শাসিত হয়েছে। তিনি রাজা গণেশ। তিনি ক্ষমতায় আরোহণের কিছুদিন পর, বাংলার রাজধানী পান্ডুয়ার মুসলমানেরা তার ওপর নানা কারণে বিরূপ হয়ে ওঠে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, বাংলার সুফি সাধক নুর কুতুবুল আলম, জৌনপুরের সুলতান ইব্রাহীম শর্কিকে বাংলা আক্রমণ করতে বলেন। সুলতান বাংলা আক্রমণ করে রাজা গণেশকে অপসারণ করেন। তার পুত্রকে ধর্মান্তরিত করে নতুন সুলতান হিসেবে মসনদে বসানো হয়।

এই ঘটনাগুলোতে, আমাদের অতীতকে বা তার বর্ণনাকে আমরা যেভাবে পাই, তাতে রাজা-রাজড়াদের যোগাযোগ থাকলেও জনমানসের একটা চিন্তা আঁচ করা যায়। আর তা হলো, অতীতে যদি সাম্প্রদায়িক সহিষ্ণুতা থেকেও থাকে, এর পাশাপাশি অসহিষ্ণুতাও ছিল। এই কারণে যুদ্ধ-বিগ্রহও হয়েছে। রাজ ইতিহাসের কিছু লেখালেখি থাকায় আমরা তা জানতে পারছি। জন ইতিহাসটি না থাকলেও, এটি অনুমান করা যায়। আমাদের দেশে বাস করা দুটি প্রধান সম্প্রদায়ের সংঘাতের এবং বিভেদের জায়গাগুলো খুব স্পষ্ট। বিভেদের এই সিলসিলা এখনো চলমান। নানারকমে; প্রকাশ্যে বা পরোক্ষে; দেশে বা প্রতিবেশী দেশে (যেমন ‘গরু’ নিয়ে যে সংকট তা কি বোরহান উদ্দিনের যুগেই শেষ হয়ে গেছে; না এখনো চলমান?) মাত্রা যেমনি হোক, অতীতে আমাদের পূর্বপুরুষরা যে সাম্প্রদায়িক ছিলেন, এই ইঙ্গিতও অস্পষ্ট নয়। অতএব, আবহমানকাল ধরে বাংলায় সব ধর্মের মানুষ সুখে শান্তিতে বাস করেছে, এই বয়ান পুরো সত্য নয়। এর মাঝে যেটুকু মিথ্যা আছে, এই রোগ সারাতে হলে সেই মিথ্যাটুকু নির্ণয় করা এবং এর ব্যবস্থাপত্র প্রস্তুত করা আমাদের জন্যে জরুরী।

আজকের বাংলাদেশের বয়স ৫০ বছর হয়ে গেছে। ব্রিটিশরা বিদায় হয়েছে প্রায় ৭৫ বছর আগে। এখনো আমাদের শিক্ষিত মানুষদের একটা বড় অংশ সাম্প্রদায়িকতার সব দোষ ব্রিটিশদের ঘাড়ে চাপাতে পছন্দ করেন। এই দায় চাপানো আমাদের লজ্জা নিবারণের এক ব্যর্থ চেষ্টা। ব্রিটিশরা আমাদের সাম্প্রদায়িকতাকে, তাদের সাম্রাজ্য রক্ষার প্রয়োজনে উস্কে দিয়েছে, বিভিন্ন কৌশলে ব্যবহার করেছে– এর প্রমাণ আছে। কিন্তু, ব্রিটিশরা আমাদের মাঝে সাম্প্রদায়িকতার জন্ম দেয়নি। এর জন্ম বহু আগে। এ অবস্থায় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা এখনো টিকে আছে কেন?– বরং এই আত্মজিজ্ঞাসা আমাদের করতে হবে। (এই সংঘাতগুলোর কিছু রাজনৈতিক-অর্থনীতি আছে; সংঘাতের আড়ালে ভোটের বা সম্পদের লাভক্ষতির হিসাবও আছে; সেই আলাপ অনেকে করেছেন; সামনেও করবেন। তবে বর্তমান নিবন্ধের আওতা ঈষৎ ভিন্ন।) এটা প্রায় সত্য, যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতার প্রতি কখনো প্রচ্ছন্ন এবং কখনো প্রকাশ্য প্রশ্রয় রয়েছে।

অনেকে বলবেন, এটা রাজনীতির কার্যকর হাতিয়ার। রাজনীতিতে এই বিষয়ের উপযোগিতা আছে বলেই, সাম্প্রদায়িকতা আছে এবং থাকবে। আমি এই চিন্তার সাথে প্রায় দ্বিমত পোষণ করি। প্রায় বললাম কারণ, আমি কিছুটা একমতও। রাজনীতিতে কাজে লাগলে দুষ্টুবুদ্ধির হায়াত বাড়ে, প্রয়োগ বাড়ে। এটা জানা কথা। কিন্তু, দুষ্টুবুদ্ধির জ্বালানী বা দিয়াশলাই আসে কোথা থেকে? শূন্য চুলায় আপনি আগুন জ্বালাতে পারবেন না; শুকনো মাঠে নৌকাও চলবে না। সাম্প্রদায়িকতার কিছু এলিমেন্ট আমাদের সমাজে, সামাজিক বয়ানে আছে সম্ভবত আদিকাল থেকেই। এগুলো দিয়ে যে বড়সড় আগুন জালানো সম্ভব, উত্তেজনা, দাঙ্গা বাধানো সম্ভব তা ব্রিটিশদের আগে কেউ বোঝে নাই। প্রয়োগও করে নাই। কিন্তু, ব্রিটিশদের পরে এই খনির খবর তো আর কারো অজানা থাকার কথা নয়। রাজনীতির কুশীলবরা এই খনির খোঁজ জানেন শতাধিকবর্ষ ধরে। অপরাজনীতি এখান থেকে লাভ তুলতে চাইবে, এটা হয়তো অসুন্দর কিন্তু অসম্ভব নয়।

প্রসঙ্গত যেই প্রশ্নটির মীমাংসা করা দরকার তা হচ্ছে, বর্তমান সময়ে, জাতি হিসেবে আমরা কেমন? সাম্প্রদায়িক না, অসাম্প্রদায়িক? এই দুটোর মাঝে আমরা অসাম্প্রদায়িক, এই ভাবনাটা বেশ জনপ্রিয়; এর একটা রাজনৈতিক আবেদন আছে; আবার জাতির মানইজ্জত রক্ষার একটা তাগিদও আছে। শুনতে ভালো লাগে। আমরা সাম্প্রদায়িক এই কথাটা কেউ বলবেন না। কারণ, এটাও সত্য যে জাতি হিসেবে আমাদের যে ইতিহাস তার বড় অংশই দৃশ্যত শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ইতিহাস।

এখন প্রশ্ন হলো কেউ সাম্প্রদায়িক বা অসাম্প্রদায়িক কিনা, তা স্রেফ প্রত্যক্ষ দৃশ্য থেকে উদ্ধার করা সম্ভব কিনা? উপমহাদেশে এমন বার বার ঘটেছে যেখানে সাম্প্রদায়িক সংঘাতের কোনও ইতিহাস, বা কারণ নেই, হঠাত বলা নেই, কওয়া নেই, সেখানেই মারামারি শুরু হয়ে গেছে। যার কোনও লেশমাত্র ছিল তা হঠাৎ কোথা থেকে উদয় হলো? আসলে আমরা ভুল জায়গায় খুঁজেছি। লোকে সাম্প্রদায়িকতা মুখে বা লেবাসে লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায় না। এটা তো কিছুটা অসুন্দর জিনিস। এটা লুকিয়ে থাকে মনের আড়ালে। আপনি যদি উপযুক্ত পরিস্থিতি এবং আবেগ তৈরি করতে পারেন আপনি দেখবেন, আমাদের দেশের মানুষের এক বিরাট অংশ গুরুতরভাবে সাম্প্রদায়িক। এমনকি, একযুগ ধরে চেনেন, খুব ভদ্রলোক, অমায়িক মানুষকেও হঠাৎ ঘোর সাম্প্রদায়িক চেহারায় আবিষ্কার করে বসতে পারেন। অনেক সময় ওই ভদ্রলোক নিজেও হয়তো জানতেন না যে তিনি এত সাম্প্রদায়িক মানসিকতার। সাম্প্রদায়িকতা আমাদের মনের গভীরে এমনভাবে লুকিয়ে থাকে যে তার সম্পর্কে আমরা নিজেরাই বেখবর। এই খবর যাদের আছে, তারাও এটি সযত্নে আড়াল করে রাখেন। ফলে, দৃশ্যত সর্বত্রই শান্তি বিরাজ করে।

কিন্তু, এই দৃশ্যও মিথ্যা কথা বলে। মিথ্যার হয়তো স্বস্তি দেবার ক্ষমতা বেশি! যারা বলেন, বাংলার ইতিহাস সব ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ইতিহাস, তারা এই শান্তিতেই আচ্ছন্ন থাকতে চান। কিন্তু, মিথ্যা যদি শান্তি দিতে পারত তবে হয়ত এই লেখাটিরই প্রয়োজন পড়ত না। এখন কথা হলো, সবার মনের খবর নেয়া তো রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব না। তাহলে, কী উপায়ে অসাম্প্রদায়িকতাকে মোকাবেলা করব? বলবেন, আইন দিয়ে করেন। আমি বলব আইনের অত জোর নেই।

আমাদের আইনগুলো অধিকাংশই অপরাধ ঘটার পরে বিচারের আয়োজন করে; এগুলোর কোনও প্রিভেন্টিভ রোল নেই। অপরাধ ঠেকাতে পারে না। ফলে, বিদ্যমান আইনে আপনি বিচার পাবেন, যদি আপনি অপরাধের শিকার হন। সম্ভাব্য অপরাধী মন নিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমাদের আইন ডিল করে না। ক্ষতি হয়ে যাবার পরই আইন তার কাজ করতে পারে। এখন সাম্প্রদায়িক ক্ষতি বা সহিংসতা ঠেকাবেন কি করে? হ্যাঁ, পুলিশ প্রটেকশন দিয়ে এই কাজ কিছুটা করা যেতে পারে। পুলিশ দেখলে দুষ্টু লোকেরা ঘরে ঢুকে যায়। কিন্তু, এর আরেকটা খারাপ দিকও আছে। পুলিশের উপস্থিতি আরেকটা বিভ্রম তৈরি করে। মনে হয় সব ঠিক আছে। কিন্তু, যে সম্প্রীতি রক্ষায় পুলিশ বা র‍্যাব লাগে, সেটা কি আসলে সম্প্রীতি? ভয় দেখিয়ে তাৎক্ষণিক কিছু কাজ উদ্ধার হতে পারে, কিন্তু, এই টোটকা কোনও স্থায়ী সমাধান নয়।

মানুষকে অসাম্প্রদায়িক বানানো বা অসাম্প্রদায়িক হতে উৎসাহিত করা, রাষ্ট্রের সার্বক্ষণিক কাজ হওয়া উচিত। সবার আগে এটা স্বীকার করে নিতে হবে যে সাম্প্রদায়িকতা আমাদের সমাজে ছিল এবং আছে, লুকিয়ে-ছাপিয়ে যেভাবেই হোক এটা আছে। একে হারাতে হবে। আইন এর প্রতিকার করতে পারে কিন্তু, প্রতিরোধ করার জন্যে আমাদের ভিন্ন কৌশল লাগবে। বাঙালির সাম্প্রদায়িক মন বা আচরণকে বোঝার কোনও চেষ্টা বা এটা নিয়ে কোনও প্রসারিত গবেষণা কখনো করা হয়েছে কি? আমার জানা নেই। এটা করা জরুরী; তাহলে এর কার্যকর প্রতিষেধক আমরা জানতে পারব। তবে, বড় পরিসরে যেসব বিষয় এই অসাম্প্রদায়িক প্রবণতাকে জিইয়ে রাখে তা অনুমান করা সম্ভব। যেমন, যে সাংস্কৃতিক চর্চাগুলো আবহমান বাংলার মন ও মানসিকতাকে উন্মুক্ত রাখত– সেই পথনাটক, গান, যাত্রাপালা, পুঁথিপাঠ বাংলার গ্রামগঞ্জ-শহর-বন্দর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। মফস্বলে থাকা সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এক এক করে। সাহিত্য, কবিতা, উপন্যাসের পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার জন্যে প্রয়োজন ছিল প্রত্যেক ইউনিয়নে অন্তত একটি করে লাইব্রেরি স্থাপন করা। সেখানে বিশ্বসেরা কবি, লেখক, ঔপন্যাসিকদের রচনা সংগ্রহে রাখা; বিদ্যালয়গুলোতে সিলেবাস এবং পরীক্ষায় এই পাঠের বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা– এই চিন্তা এবং উদ্যোগ নিতে হবে রাষ্ট্রকেই। বড়মানের মানুষ, সহিষ্ণু মানুষ তৈরি করতে প্রসারিত চিন্তা, উপযোগী অবকাঠামো এবং অর্থ লাগে। অসাম্প্রদায়িক মানুষ তৈরি হয়, বৃহত্তর সাংস্কৃতিক পরিসরে। এই কাজ আইন দিয়ে বা শাস্তির ভয় দেখিয়ে করা যাবে না। যে লড়াই চালানোর কথা সংস্কৃতির এবং এর অন্যান্য অনুষঙ্গগুলোর, সেই দায় একক বা প্রায় এককভাবে আইনের ঘাড়ে চাপালে আইন ফেল করবে। আইন ফেল করুক এটাই যদি প্রত্যাশা না হয়, তাহলে এই দায় অন্যদেরও নিতে হবে।

সাঈদ মাসুদ রেজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। বর্তমানে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক হিসেবে রয়েছেন।

সূত্রঃ বিডিনিউজ

পূর্ববর্তী সংবাদ

একাদশে ভর্তির অনলাইন আবেদন শুরু শনিবার

পরবর্তী সংবাদ

১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীরা টিকা ছাড়া স্কুলে নয়: মন্ত্রিপরিষদ সচিব

পরবর্তী সংবাদ
১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীরা টিকা ছাড়া স্কুলে নয়: মন্ত্রিপরিষদ সচিব

১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীরা টিকা ছাড়া স্কুলে নয়: মন্ত্রিপরিষদ সচিব

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ সংবাদ

সাব্বির-মিঠুন-সৌম্যদের ব্যর্থতায় ৮০ রানে অলআউট বাংলাদেশ

সাব্বির-মিঠুন-সৌম্যদের ব্যর্থতায় ৮০ রানে অলআউট বাংলাদেশ

আগস্ট ১৭, ২০২২
অনিয়ম করলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন কমিটি দেবে সরকার

অনিয়ম করলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন কমিটি দেবে সরকার

আগস্ট ১৭, ২০২২
বাংলাদেশ সংকটময় পরিস্থিতিতে নেই: আইএমএফ

বাংলাদেশ সংকটময় পরিস্থিতিতে নেই: আইএমএফ

আগস্ট ১৭, ২০২২
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আ. লীগের নেতারা কী করেছিলেন: প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আ. লীগের নেতারা কী করেছিলেন: প্রধানমন্ত্রী

আগস্ট ১৭, ২০২২
বরগুনা থেকে সরানো হলো পুলিশের ৫ সদস্যকে, তালিকায় আরও ৭

বরগুনা থেকে সরানো হলো পুলিশের ৫ সদস্যকে, তালিকায় আরও ৭

আগস্ট ১৭, ২০২২

জনপ্রিয় সংবাদ

৫ স্বজন হারিয়ে বেঁচে রইলেন নবদম্পতি

৫ স্বজন হারিয়ে বেঁচে রইলেন নবদম্পতি

আগস্ট ১৬, ২০২২
জন্মনিবন্ধনে লাগবে না মা-বাবার সনদ

জন্মনিবন্ধনে লাগবে না মা-বাবার সনদ

আগস্ট ১৫, ২০২২
বান্দরবানে পর্যটকদের নজর কাড়ছে ‘গোল্ডেন টেম্পল’

বান্দরবানে পর্যটকদের নজর কাড়ছে ‘গোল্ডেন টেম্পল’

আগস্ট ১৬, ২০২২
কক্সবাজারে ‌‌কটেজ জোনের দালাল চক্রের মূল হোতা আটক

কক্সবাজারে ‌‌কটেজ জোনের দালাল চক্রের মূল হোতা আটক

আগস্ট ১৬, ২০২২
সিআইডি প্রধান হলেন মোহাম্মদ আলী মিয়া

সিআইডি প্রধান হলেন মোহাম্মদ আলী মিয়া

আগস্ট ১৬, ২০২২

আর্কাইভ ক্যালেন্ডার

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 ১২৩৪৫৬
৭৮৯১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু
© ২০২২ আমাদের রামু ডট কম কতৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

যোগাযোগঃ ০১৮৩৫ ৬১৬ ৯৫১ ইমেইলঃ [email protected]

আমরা রাষ্ট্র তথা এলাকার উন্নয়ন, সমস্যা এবং সম্ভাবনার কথা তুলে ধরি। আমরা কেউ কারো প্রতিপক্ষ নই কিন্তু বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আমরা আপসহীন থাকার চেষ্ঠা করি। আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি যে, সংবাদপত্র রাষ্ট্রের অপর তিন স্তম্ভ- সংসদ, প্রশাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের পর চতুর্থ স্তম্ভ। একটি কার্যকর রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনায় দায়িত্বশীল সংবাদপত্রের গুরুত্ব অপরিসীম।
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • প্রাইভেসি পলিসি
  • ইউনিকোড কনর্ভারটার

প্রযুক্তি সহায়তায় ❤ ডেবস্ওয়্যার

ফলাফল নেই
সকল ফলাফল দেখুন
  •  
  • কক্সবাজার জেলা
    • কক্সবাজার সদর
    • উখিয়া
    • কুতুবদিয়া
    • চকরিয়া
    • টেকনাফ
    • পেকুয়া
    • মহেশখালী
  • পার্বত্য চট্রগ্রাম
    • বান্দরবান
    • রাঙ্গামাটি
    • খাগড়াছড়ি
  • সারাদেশ
    • ঢাকা
    • চট্টগ্রাম
    • খুলনা
    • বরিশাল
    • ময়মনসিংহ
    • রংপুর
    • রাজশাহী
    • সিলেট
  • মতামত
    • সম্পাদকীয়
    • গোলটেবিল বৈঠক
    • ধর্মকথা
    • সাক্ষাৎকার
    • তারুণ্যের লেখালেখি
    • ছড়া ও কবিতা
    • কলাম
    • সাধারণের কথা
    • অনলাইন ভোট
  • বিশেষ প্রতিবেদন
    • কীর্তিমান
    • প্রতিভা
    • ঐতিহ্য
    • অবহেলিত
    • পুরাকীর্তি ও প্রত্নতত্ত্ব
    • শেখড়ের সন্ধান
    • প্রতিষ্ঠান
  • রাজনীতি
    • আওয়ামীলীগ
    • বিএনপি
    • জাতীয়পার্টি
    • রাজনৈতিক দল সমূহ
    • ছাত্র রাজনীতি
  • নির্বাচন
    • স্থানীয় সরকার
    • সংসদ
    • ইসি
  • শিল্প-সাহিত্য
    • কবিতা
    • গল্প
    • উপন্যাস
    • আর্ট
    • চিঠি
    • ছড়া
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
    • সংবাদ
  • বিবিধ
    • প্রধান খবর
    • রামু প্রতিদিন
    • পর্যটন
      • বৌদ্ধ ‍বিহার
      • স্থাপনা
      • প্রাকৃতিক
    • চাকরির খবর
    • শিল্প-সাহিত্য
    • সংস্কৃতি
    • বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি
    • উন্নয়ন
    • সাংস্কৃতিক
    • মানচিত্রে রামু
    • শিক্ষাঙ্গন
    • শিক্ষা
    • রামু তথ্য বাতায়ন
    • সমস্যা ও সম্ভাবনা
    • আমাদের রামু পরিবার
    • অপরাধ
    • আইন-আদালত
    • সংসদ ও মন্ত্রীসভা
    • স্বাস্থ্য

© 2022 JNews - Premium WordPress news & magazine theme by Jegtheme.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist