অনলাইন ডেস্কঃ
শিশুদের শৈশবকালীন অবস্থা বিবেচনায় বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি হয়েছে। বাল্যবিয়ে, কিশোরী বয়সে গর্ভধারণ, শিশুমৃত্যু, শিশুশ্রম, অপুষ্টি, শিশুর প্রতি সহিংসতাসহ আট বিষয় বিবেচনায় নিয়ে করা এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩০তম। গত বছর এ অবস্থান ছিল ১৩৪। ১৭৫টি দেশের ওপর ‘বহুমাত্রিক বঞ্চনা’ শীর্ষক এ জরিপে চালিয়েছে শিশু অধিকার বিষয়ক দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।
বিশ্ব শিশু দিবস সামনে রেখে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশ তাদের এই গ্লোবাল রিপোর্ট প্রকাশ করে। রিপোর্ট উপস্থাপন করেন সংস্থার শিক্ষা কর্মসূচির আওতাভুক্ত হোপ প্রকল্পের পরিচালক কামাল হোসেন। এ সময় সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশের পরিচালক (প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট ও কোয়ালিটি) রিফাত বিন সাত্তার উপস্থিত ছিলেন।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য প্রতিবেশীর তুলনায় গত একবছরে বাংলাদেশের অগ্রগতি ঈর্ষণীয়। এবার বাংলাদেশ পেয়েছে ৭০১ পয়েন্ট, যা গতবারের চেয়ে ২১ পয়েন্ট বেশি। প্রতিবেশীদের মধ্যে পাকিস্তান (১৪৯) ও আফগানিস্তান (১৬০) বাংলাদেশের পেছনে থাকলেও সামনে রয়েছে শ্রীলংকা (৬০), মিয়ানমার (১০৭) ও ভারত (১১৩)। এই সূচকে ১৭৫টি দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যৌথভাবে সিঙ্গাপুর ও স্লোভেনিয়া। শীর্ষ পাঁচের অন্য দেশগুলো হলো— নরওয়ে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ড। অনিরাপদ শৈশবের দিক দিয়ে শীর্ষ ১০ দেশের আটটিই পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার। নাইজারের শিশুদের শৈশব সবচেয়ে কষ্টকর বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি শিশু যাদের বয়স পাঁচ বছরের কম তারা অপুষ্টিতে ভোগে। ৪৪ ভাগ কিশোরীর ২০ বছরের আগে বিয়ে হয়ে যায়। এ ছাড়া সাড়ে তিন ভাগ শিশু পাঁচ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই মারা যায়।
রিপোর্টের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে কামাল হোসেন বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের শিশুদের অবস্থা কিছুটা ভালো। তবে প্রান্তিক শিশুরা বিভিন্নভাবে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী শিশুরাও রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে ২০ শতাংশেরও কম স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায়। স্কুলের বাইরে থাকা শিশুদের মধ্যে ৫৩ শতাংশের মধ্যে দৃশ্যমান প্রতিবন্ধিতা রয়েছে। প্রতিবন্ধিতার শিকার এসব শিশুর স্কুলে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টির জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। পাশাপাশি একীভূত শিক্ষার ব্যাপক বিস্তারের জন্য জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সংগঠনগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
রিফাত বিন সাত্তার বলেন, ‘বাংলাদেশ বিভিন্ন সূচকে বেশ ভালো উন্নতি করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি শিশুদের স্কুলে পাঠানোর ক্ষেত্রে। তবে চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী ও প্রতিবন্ধিতার শিকার শিশুরা শিক্ষায় অগ্রগতির সুফল খুব বেশি পাচ্ছে না।’
সূত্রঃ সমকাল অনলাইন